সুনামগঞ্জ , শনিবার, ০৪ অক্টোবর ২০২৫ , ১৯ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
বিএনপিতে চাঁদাবাজের ঠাঁই নেই : মাহবুবুর রহমান ৯ মাসে ছয়শ’র বেশি ধর্ষণ এনসিপির কেন শাপলাই চাই? সুনামগঞ্জে নির্বিঘ্নে সম্পন্ন হলো শারদীয় দুর্গোৎসব ৪০০ ছাড়িয়েছে কাঁচা মরিচ, শতকের কাছাকাছি বেশিরভাগ সবজি ‎জামালগঞ্জে প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে শেষ হলো দুর্গাপূজা দেখার হাওর ঢেকে যাবে বিশ্ববিদ্যালয়ে উকিলপাড়ায় পাইপলাইনের লিকেজ থেকে গ্যাস নির্গমন : দুর্ঘটনার আশঙ্কা দুর্গাপূজা : মাহাত্ম্য ও তাৎপর্য পূজামন্ডপ পরিদর্শন করলেন সিলেট রেঞ্জের ডিআইজি ৩ ফার্মেসিকে ৭ হাজার টাকা জরিমানা পথে যেতে যেতে: পথচারী সুনামগঞ্জ পৌর শহরে স্পিডব্রেকারগুলো যেন মরণফাঁদ! ‎জামালগঞ্জে 'উন্নতি সঞ্চয় ঋণদান সমবায় সমিতির' শিক্ষা উপকরণ ও  বস্ত্র বিতরণ সুনামগঞ্জে 'ধর্ষণ মামলায়' আসামিদের শাস্তির দাবিতে পরিবারের সংবাদ সম্মেলন নির্বাচনের প্রস্তুতি অনেক এগিয়ে নিয়েছি : সিইসি আন্তর্জাতিক তথ্য অধিকার দিবস পালিত যৌতুক না পেয়ে স্ত্রীকে হত্যায় স্বামীর মৃত্যুদন্ড আজীবন জনগণের সেবা করতে চাই : পাবেল চৌধুরী ফার্মেসিতে দেদারসে বিক্রি হচ্ছে ‘ফিজিশিয়ান স্যাম্পল’

আমরা শোকাহত, আমরা ক্ষুব্ধ

  • আপলোড সময় : ২৩-০৭-২০২৫ ০৮:১৪:৩৬ পূর্বাহ্ন
  • আপডেট সময় : ২৩-০৭-২০২৫ ০৮:১৪:৩৬ পূর্বাহ্ন
আমরা শোকাহত, আমরা ক্ষুব্ধ
ঢাকার উত্তরা দিয়াবাড়িতে মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের প্রাঙ্গণে বিমান বাহিনীর একটি যুদ্ধ বিমান বিধ্বস্ত হয়ে এ পর্যন্ত ৩১ জনের প্রাণহানি এবং দেড় শতাধিক আহত হওয়ার হৃদয়বিদারক ঘটনায় আমরা গভীরভাবে শোকাহত, স্তব্ধ এবং ক্ষুব্ধ। নিহতদের অধিকাংশই কোমলমতি শিশু শিক্ষার্থী। আগুনে ঝলসে যাওয়া ছোট ছোট দেহ, চোখের সামনে সন্তানকে হারানো মায়ের আহাজারি - এই দৃশ্য কেবল একেকটি পরিবারকে নয়, সমগ্র জাতিকে দগ্ধ করেছে। একটি যুদ্ধবিমানের বিধ্বস্ত হয়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আছড়ে পড়া কেবল দুর্ঘটনা নয়, এটি একটি ভয়াবহ নিরাপত্তাজনিত ব্যর্থতার নাম। প্রশিক্ষণ চলাকালীন, জনবহুল আবাসিক ও শিক্ষাকেন্দ্রের ওপর দিয়ে যুদ্ধবিমান ওড়ানোর যৌক্তিকতা কোথায়? একটি আধুনিক রাষ্ট্র ব্যবস্থায় এমন মারাত্মক ঝুঁকি নেওয়া কীভাবে অনুমোদিত হতে পারে? বিমানটি ছিল এফ-৭ বিজিআই, যা চীনের তৈরি পুরোনো মডেলের একটি সংস্করণ। ইতিপূর্বে বাংলাদেশেই এই মডেলের একাধিক বিমান বিধ্বস্ত হয়েছে এবং পাইলট নিহত হয়েছেন। তারপরও এসব ঝুঁকিপূর্ণ বিমানের ব্যবহার অব্যাহত রাখা এবং সেগুলোর নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণ ও নিরাপদ মহড়া ব্যবস্থার অভাব এই দুর্ঘটনার বড় কারণগুলোর একটি বলে মনে করা হচ্ছে। আরও আশঙ্কাজনক বিষয় হলো, দুর্ঘটনার সময় স্কুলে ক্লাস চলছিল। শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও শিক্ষক - তিন পক্ষই ভবনে অবস্থান করছিলেন। আগুনের তাপে ভবনের ভেতরে ঢোকার কোনো উপায় ছিল না, বহু শিশু ভবনের মধ্যেই পুড়ে মারা গেছে। এত বড় সংখ্যক প্রাণহানির দায় কে নেবে? নিছক “দুর্ঘটনা” বলেই কি রাষ্ট্র দায় এড়াতে পারে? সেনাবাহিনী ও ফায়ার সার্ভিসের তাৎক্ষণিক উপস্থিতি ও তৎপরতা প্রশংসার দাবি রাখে, কিন্তু তাতে ক্ষয়ক্ষতির ভয়াবহতা কমেনি। বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন ছোট্ট শিশুগুলোর অসহ্য যন্ত্রণা, মা-বাবার কান্না - এই সবকিছু রাষ্ট্রযন্ত্রকে আরও মানবিক ও জবাবদিহিমূলক আচরণের প্রয়োজনীয়তা স্মরণ করিয়ে দেয়। আমরা চাই, এই ঘটনায় একটি পূর্ণাঙ্গ ও স্বচ্ছ তদন্ত হোক। দোষী প্রমাণিত হলে যেন কোনো র‌্যাঙ্ক বা পদ বিবেচনায় না এনে শাস্তি নিশ্চিত করা হয়। পাশাপাশি, পুরোনো যুদ্ধবিমানগুলো কী অবস্থা, তারা নিরাপদ কিনা - তা দ্রুত পর্যালোচনা করতে হবে। প্রশিক্ষণের জন্য ব্যবহৃত এলাকাগুলো নির্জন অঞ্চলেই সীমাবদ্ধ রাখা উচিত। এ দুর্ঘটনা শুধু বিমানবাহিনীর নয়, এটা পুরো রাষ্ট্রব্যবস্থার জন্য একটি সতর্ক সংকেত। আর কোনো মা যেন সন্তানকে পোড়ার ঘ্রাণে খুঁজে না ফেরেন, আর কোনো শিশু যেন বইয়ের ব্যাগ হাতে আগুনে পুড়ে না মরে - সেই নিশ্চয়তা আমরা চাই। আমরা শোকাহত, আমরা ক্ষুব্ধ। কিন্তু সেইসঙ্গে আমরা জবাব চাই। মাইলস্টোন ট্র্যাজেডি যেন রাষ্ট্রের বিবেক নাড়িয়ে দেয় - এই প্রত্যাশা করি।

নিউজটি আপডেট করেছেন : SunamKantha

কমেন্ট বক্স